By: জেন সিনচেরো
Category:general
BDT 350.00
BDT 245.00
In Stock (20 copies available)
স্টক আউট হওয়ার আগেই অর্ডার করুন
Add to wishlist
Title | ইউ আর আ ব্যাডঅ্যাস (হার্ডকভার) |
Author | জেন সিনচেরো |
Publisher | চর্চা গ্রন্থ প্রকাশ |
ISBN | 9789849268239 |
Edition | 1st |
Page Number | N/A |
কোনো সহায় সম্বল কিংবা কোনো উপায় থাকলেও তুমি শূন্য থেকেই শুরু করো। পথ একটা হয়েই যাবে। (রেভারেন্ড মাইকেল বের্নার্ড : মাদকাসক্ত থেকে)এসব হয়তো খুব সুন্দর কথা। তবে এসব আপ্তবাক্য, উদ্ধৃতি কিংবা মহাজন বাণীর কোনো মূল্য আমার কাছে কখনোই ছিল না। এধরনের কথাবার্তাকে স্রেফ আবর্জনা মনে হতো। এসব কথাবার্তা দিয়ে আসলে কোন ঘোড়ার ডিমটা বোঝানো হতো, তাও বুঝতে পারতাম না। তবে এর মানে এই নয় যে, আমি এসব কথা শুনে বিরক্ত হতাম। আসলে এসব কথাকে পাত্তাই দিতাম না আমি। আমার মনে কোনোই ভাবান্তর হতো না।নিজেকে নিজে সাহায্য করা/আধ্যাত্মিক জগৎ এসব সম্পর্কে আমার জ্ঞান ছিল শোচনীয়ভাবে কম। মনে হতো নৈরাশ্যবাদী আর হতাশাগ্রস্ত লোকেরাই এসব বিশ্বাস করে। তারা গির্জায় গিয়ে ধরনা দেয়। ভক্তির আতিশয্যে মাত্রাজ্ঞান হারায়। কিন্তু একজন অপরিচিত লোক আপনাকে হঠাৎ জড়িয়ে ধরলে আপনি যেরকম অস্বস্তিকর অনুভূতিতে আক্রান্ত হতে পারেন, এসব কিছু আমার কাছে সেরকমই মনে হতো। ঈশ্বর নিয়েও আমার তেমন কোনো চিন্তা বা মাথাব্যথা ছিল না।একই সঙ্গে আমি যেভাবে আছি সেটাও ভাল লাগত না। আমি চাইতাম জীবনে পরিবর্তন আসুক। মনে হতো, চারপাশের ভণ্ডামি কিংবা ন্যাকামিগুলোর মূলোচ্ছেদ করতে পারলে সে পরিবর্তনটা হয়তো আসবে। আমি এমনিতে কিছু ভাল কাজ করতে পেরেছি। আমার কিছু প্রকাশিত বই আছে, ভাল কিছু বন্ধু আছে, একটা নিবিড় পরিবার আছে। আমি একটা ভাল অ্যাপার্টমেন্টে থাকি, গাড়িতে চড়ে ঘুরে বেড়াই। শক্ত দাঁতে ভাল করে চিবিয়ে খেয়ে স্বাদ অনুভব করার ভাল খাবার খাই। পরার জন্য ভাল পোশাক আশাক আছে এবং বিশুদ্ধ পানি খেয়ে তৃষ্ণা মেটাতে পারি। এ গ্রহের সিংহভাগ মানুষের চেয়ে ভাল অবস্থায় জীবন যাপন করি আমি। আসলে আমার জীবনটা মাখনের মতো স্বচ্ছ আর নরম।তবে নিজের দুর্বলতাটাও জানা ছিল আমার। সেটা হলো চারপাশের মানুষকে মুগ্ধ বা আকর্ষণ করার মতো ক্ষমতা আমার ছিল না। একটা দ্বিধা কাজ করত, সব সময় খুঁত খুঁত করতাম, যা করছি সব চেয়ে ভালভাবে করছি তো! আমি কি কর পরিশোধ করাসহ অন্যান্য খরচপাতি সামলানোর জন্যে যথেষ্ট উপার্জন করছি এই মাসে?আমার চারপাশের মানুষগুলো নিয়েও আমি বীতশ্রদ্ধ ছিলাম। আমি হতাশা বোধ করতাম। এই প্রতিশ্রুতিবিহীন টলমলে সম্পর্কগুলো নিয়ে আমাকে আরেকটা বছরের দিকে যাত্রা শুরু করতে হবে এবং সেগুলো টিকিয়ে রাখার ভান করতে হবে। তাই হাজারবার লক্ষবার নিজেকে সে পুরনো প্রশ্নটাই করতাম যে, আমি কি আমার গভীর মনের গোপন উদ্দেশ্যটা ঠিক মতো বুঝতে পারছি? আর কতদিন আমাকে এভাবে কষ্টকর জোলো অবস্থার মধ্য দিয়ে চলতে হবে? এটা তো নিজের খোলসের ভেতরেই গুটিয়ে থাকা একটা শামুকের জীবন। মনে হতো আমি খুব মাঝে মধ্যে দু’একটা আনন্দময় ঘটনা ছাড়া মোটামুটি একটা ম্যাড়ম্যাড়ে জীবন কাটাচ্ছি।সবচেয়ে গভীর কষ্টের বিষয় ছিল, মনের গভীর থেকে আমি জানতাম যে, একজন সঙ্গীত তারকা বা রকস্টার হওয়ার মতো পুরো যোগ্যতা আমার ছিল। আমার দেয়ার ক্ষমতা ছিল, নেয়ার ক্ষমতাও ছিল। আমার মনে হতো এক লাফে একটা উঁচু বিল্ডিং পেরিয়ে যেতে পারি কিংবা মনের ভেতর যা আছে, তা দিয়ে সুন্দর যে কোনো কিছু সৃষ্টি করতে পারি। ....কন্তিু আমি আসলে কী করছ? কিন্তু আমি কেবল একটা গাড়ি পার্ক করার টিকিট কিনছি।আপনি হয়তো আমাকে ঠাট্টা করতে পারেন। কিন্তু তাতে আমার কিছু আসে যায় না। এটা আমার জন্যে এই মাসের তৃতীয় ঘটনা। আমি এক্ষুণি নিচে গিয়ে তাদের সঙ্গে ঝগড়া করে আসতে পারি। তারপর যেমনকে সেই। অহেতুক কিছু সময় নষ্ট। সপ্তাহ কয়েক পরে মনে হবে, অহেতুক কিছু সপ্তাহ কেটে গেল। আর আমি আমার বিবর্ণ একঘেয়ে অ্যাপার্টমেন্টটাতে আটকা পড়ে আছি, রাতের বেলায় নিজের টাকায় কেনা একটা মেক্সিকান ডিশ দিয়ে ডিনার সারছি।আমি বুঝতে পারছি, আপনি আমার কথাগুলো শুনে ভাবছেন, আপনার জীবনেও তো এরকম কিছু ঘটে। সেসব আপনারও ভাল লাগে না। আপনিও হয়তো আরো ভাল কিছু চাইছেন। হতে পারে আপনি আপনার স্বজনদের নিয়ে আনন্দের বিষয়গুলো উপভোগ করছেন, কিন্ত আপনি এতটা নিঃস্ব যে, আপনার কুকুরট কে ঠিক মতো খেতে দিতে পারছেন না।আবার এমনও হতে পারে, আপনি অনেক টাকা কামাচ্ছেন, আপনার চাওয়াগুলো ঠিকভাবেই মেটাতে পারছেন, আপনার অলস সময়গৃুলো কাটছে হৈ হুল্লোড় করে ভাল মদ খেতে খেতে অবশ্য তার বিপরীত কিছুও হতে পারে। আপনি হতাশও হতে পারেন এই ভেবে যে আপনার গৃহপরিচারিকা সারাক্ষণ ক্যাট ক্যাট করে কথা বলে, কখনো হাসিমুখে একটু মজাও করে না। আপনি ভাবতে পারেন, আপনার আর্থিক সঙ্কটের জন্যে সেও কিছু দায়ী। অথবা এমনটাও হতে পারে আপনার সব কিছু থাকার পরেও কিছু কিছু কারণে অতৃপ্তিতে ভুগছেন। কিন্তু তার কোনো দরকার নেই। আপনাকে যে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার কামাতে হবে, তা নয়। অথবা এমনও নয় যে, পৃথিবীর সব সমস্যা সমাধানের ভার আপনার কাঁধে নিতে হবে। কিছুর দরকার নেই। আপনি শুধু নিজের পরিবারের কথা ভাবুন অথবা আপনার প্রিয় টিউলিপ গাছটাতে ফুল ফোটানোর কাজে লেগে পড়–ন। এতেই আপনি সুখে থাকার উপকরণ খুঁজে পাবেন। সুখের অনুভূূতি আপনাকে উজ্জীবিত রাখবে। তাহলে আর সুখে থাকার ভান করতে হবে না।অথবা এমনও হতে পারে আপনি এমনটা পারেন না। আপনি একজন লোভী, অহঙ্কারী আর গণ্ডমুর্খ ধরনের মানুষ। আপনার কাছে যা আছে, তার চেয়ে আরো বেশি চান। আপনি নিজেকে সবচেয়ে বড়, সুখী ও শক্ত মানুষ হিসেবে দেখতে চান।তাহলে কী করতে হবে? খুব সাধারণ একটা কাজ। আপনাকে আপনার জীবনের পরিবর্তন চাইতে হবে এবং সে ব্যাপারে সিদ্ধান্তও নিতে হবে। চাওয়াটা কোনো ব্যাপার না। সোফায় বসে ধূমপান করতে করতে অথবা লেপের নিচে শুয়ে ট্রাভেল ম্যাগাজিনের পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে এটা আপনার মনে আসতে পারে। কিন্তু সিদ্ধান্ত নেয়াটাই হলো বড় ব্যাপার। সিদ্ধান্তটা নেয়ার পর সেটা বাস্তবায়িত করার জন্যে আপনাকে দৌড়ঝাঁপ শুরু করতে হবে। যা যা করার সব করতে হবে। স্বপ্নের পেছনে ছুটতে হবে নেশাগ্রস্তের মতো।সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্যে আপনাকে অনেক কিছু করতে হবে। এমন কিছু, যা আগে আপনি বন্ধুদের সমালোচনার ভয়ে করার কথা চিন্তাও করেননি। টাকাপয়সাও খরচ করেননি, পাছে তারা আপনাকে বোকা ভেবে বসে। কিন্তু এখন তাই হতে পারে। বন্ধুরা আপনাকে নিয়ে উদ্বিগ্ন হবে, বিরক্ত হবে, হয়তো আপনাকে এর পর থেকে এড়িয়ে চলতে চাইবে। কারণ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্যে উঠে পড়ে লাগলে আপনার আচার ব্যবহারে এমন কিছু পরিবর্তন আসতে পারে, যা আপনাকে তাদের থেকে ভিন্ন ও স্বতন্ত্র ব্যক্তিতে পরিণত করতে পারে।